ট্যুরিস্ট সিম | Bangladesh tourist SIM Card | Tourist SIM A to Z

বাংলাদেশে অবশেষে চালু হতে যাচ্ছে ট্যুরিস্ট সিম । এখন এই ট্যুরিস্ট সিম কি ? এই ট্যুরিস্ট সিম কাদের জন্য বা এটা কিভাবে পেতে পারেন এবং এই ক্ষেত্রে কি কি থাকবে না থাকবে এই সকল বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা।

ট্যুরিস্ট সিম কি?

ট্যুরিস্ট সিম

ট্যুরিস্ট সেইম একটি নরমাল সিমের মতো । আসলে বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশে ঘুরতে আসে বা যে পর্যটকরা বিভিন্ন স্থান দেখতে আসে তাদের জন্য এই ট্যুরিস্ট সিম তৈরি করা হয়েছে । মানে বিদেশি পর্যটক বা ট্যুরিস্টরা যে আমাদের দেশে ঘুরতে আসে এবং তখন তাদের যোগাযোগ করার জন্য যে একটি সিম প্রয়োজন হয় । তখন তারা চাইলেই তো আর আমাদের যে অফিসিয়াল সিম গুলো আছে বাংলাদেশে সেগুলো কিনতে পারেনা । তাই স্পেশালি তাদের জন্য এই ট্যুরিস্ট সিম ।

মনে করেন আমরা যদি বাংলাদেশের বাইরে ভারত কিংবা অন্য কোন দেশে যাই , তখন কিন্তু আমরা সেখানে অল্প সময়ের জন্য ঘুরতে যাই বা কোন একটি বিশেষ কাজের জন্য জেয়ে থাকি । তখন সেই সময় আমার যে রিলেটিভ গুলো আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আমার একটি সিমের প্রয়োজন হয় এবং তখন আমি ওইখান থেকে যে সিমটা নিয়ে মূলত সেই সিমকে ট্যুরিস্ট সিম বলা হয়।

বাংলাদেশে এরকম কোন সিস্টেম ছিল না , মানে কোন বিদেশি যদি আমাদের দেশে আসতো তাহলে প্রচলিত নিয়মে তাদের পাসপোর্ট দেখানোর মাধ্যমে অথবা তাদের পাসপোর্ট এবং ভিসা  দেখানোর মাধ্যমে একটি সিম নিতে পারতো । এইখানে আমাদের দেশে একটি সমস্যা হতো সেটা আমি একটু বিস্তারিত ভাবে বুঝাচ্ছি ।

ধরুন যখন একজন বিদেশি ট্যুরিস্ট আমাদের দেশে আসতো , তখন সে তার পাসপোর্ট ভিসা দেখে আমাদের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী একটি সিম ক্রয় করতো । এবং সেই ট্যুরিস্ট ৫ দিন ৭ দিন অথবা ৩০ দিন পর কিন্তু চলে যেত এবং তখন কিন্তু সেই ট্যুরিস্ট ওই ক্রয় কি তো সিমটি আর ব্যবহার করতে পারতো না । এবং সিম কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী ৫৩০ থেকে ৪০ দিন পর সেই সিমটি কোম্পানি আবার পুনরায় বিক্রি করতে পারতো । এই ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আমাদের কোম্পানির কিছু ক্ষতি হতো এবং কেউ চাইলেই এই সিমটি দিয়ে মিসইউজ করতে পারতো । তখন আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো ।

তাই বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে এবং বিদেশি ট্যুরিস্টদের জন্য বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সিম তৈরি করেছে এবং তা সরবরাহ করতেছে । আজকের আর্টিকেলে আমরা ট্যুরিস্ট সিমের সুবিধা অসুবিধা এবং ইত্যাদি ইত্যাদি তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো ।

ট্যুরিস্ট সিম কিনতে কি কি প্রয়োজন?

ট্যুরিস্ট সিম কিনতে আমাদের বিশেষ কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন। আমি আপনি চাইলেই কিন্তু আমাদের ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে কিনতে পারবো না । ট্যুরিস্ট সিম কিনতে প্রয়োজনঃ

১. আপনার একটি সক্রিয় পাসপোর্ট থাকতে হবে ।

২. আপনার একটি ভিসা থাকতে হবে ।

মানে মূল কথা আপনার একটি সক্রিয় পাসপোর্ট এবং ভিসা থাকলেই আপনি ট্যুরিস্ট সিম ক্রয় করতে পারবেন । আবার এইখানে আরেকটি কথা না বললেই নয় । আপনি যে ট্যুরিস্ট সিমটি কিনবেন সেই সিমটির একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকবে । নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনটি প্যাকেজ বিদ্যমান রয়েছে । মানে আপনি চাইলে ৭ দিনের জন্য, ১৫ দিনের জন্য অথবা ৩০ দিনের জন্য একটি ট্যুরিস্ট সিম ক্রয় করতে পারবেন ।

দ্বিতীয়তঃ আপনার ট্যুরিস্ট সিমের মেয়াদ ৭ দিন , ১৫ দিন অথবা ৩০ দিন পর সিমটি অটোমেটিক বন্ধ বাদ হয়ে যাবে । একজন ট্যুরিস্ট তার পাসপোর্ট ভিসা মাধ্যমে সর্বোচ্চ দুইটা ট্যুরিস্ট সিম ক্রয় করতে পারবে । এটি বর্তমানে রুলস অনুযায়ী তবে ভবিষ্যতে এর সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা তা এখনো জানা যায়নি ।

বিষয়টা আপনাদের একটু সহজ ভাবে বুঝাচ্ছি , ধরুন আমি একজন ট্যুরিস্ট এবং আমি বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছি । এখন আমি যোগাযোগ করার জন্য একটি বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সিম আমার ভিসা পাসপোর্ট দেখানোর মাধ্যমে ক্রয় করলাম । উক্ত তুরিস্ট সেনটি আমি ৩০ দিনের জন্য ক্রয় করলাম । এখন ৩০ দিন পর যদি আমি আরো থাকতে চাই তাহলে , আমাকে আরেকটি ট্যুরিস্ট সিম ৩০ দিন মেয়াদে কিনতে হবে । কারণ আগের সিমটি ৩০ দিন পর অটোমেটিক বাতিল অথবা বন্ধ হয়ে যাবে । 

ট্যুরিস্ট সিম সিরিজ

আমরা যেমন গ্রামীণ বাংলালিংক এবং রবি প্লাস বিভিন্ন যে সিম গুলো ব্যবহার করি সেগুলো সিমের আলাদা আলাদা সিরিজ আছে । মানে 017 , 019 , 018 ইত্যাদি ইত্যাদি আলাদা সিমের আলাদা আলাদা সিরিজ রয়েছে ।  ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সিমের এরকম আলাদা অন্য রকম একটি সিরিজ থাকবে । যার মাধ্যমে আমরা যেমন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম ক্রয় করি , ঠিক তেমনি ভাবে ট্যুরিস্টের পাসপোর্ট ভিসার সকল ইনফরমেশন ওই অপারেটরের কাছে জমা থাকবে যেন খুব সহজেই সেই ট্যুরিস্ট কে তারা ট্রাক করতে পারে । এবং ট্যুরিস্ট সিম ট্যুরিস্টদের ইন্টারেস্টিং অনেক প্যাকেজ অফার করতে পারে যা আমরা নরমাল যে সিম ইউজারগুলো আছি তারা কখনোই সেই অফার গুলো পাবো না ।

তবে সেই ট্যুরিস্ট সিম ট্যুরিস্টদের যে অফার গুলো তাদের অফার করবে তার জন্য অবশ্যই আগে বিআরটিসি এর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে । যার ফলে দেখা যেতে পারে যে ট্যুরিস্ট সিমের কিছু আলাদা ফ্যাসিলিটি বেশি বা কম রয়েছে অথবা আমাদের নরমাল সিমের সুযোগ সুবিধা গুলো বেশি রয়েছে । এরকম কম বেশি হতে পারে ।

তো এই ছিল বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সিমের সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা । এবং এখন যদি আমার পার্সোনাল মতামত জানতে চান তাহলে তা হবে ,

ট্যুরিস্ট সিম হচ্ছে যে বিদেশি পর্যটকরা আমাদের দেশে আসে তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য একটি সিম । যার মেয়াদ বাংলাদেশী রুলস অনুসারে ৩০ দিন পর্যন্ত থাকবে । সেই ট্যুরিস্ট এ কিছু প্যাকেজ আলাদা থাকবে যার শুধু ট্যুরিস্টদের জন্য । ঐ সকল প্যাকেজ এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ওই সিমটি মাত্র ৩০ দিন ব্যবহার করতে পারবে । ঠিক ৩০ দিন পর ওই সিম টি অটোমেটিক ডিএক্টিভ অথবা বন্ধ হয়ে যাবে ।  এটাই হচ্ছে ট্যুরিস্ট সিমের সুযোগ সুবিধা । এক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক সুবিধ এবং আলাদা যে ব্যাপারগুলো আছে সেগুলো আমাদের নরমাল সিমের মতোই ,সবকিছু একই । এখানে আলাদা কোন বাড়তি সুযোগ-সুবিধা নেই । শুধুমাত্র অফারের প্যাকেজের ডিফারেন্স এবং সেই সিমের মেয়াদের ডিফারেন্স । 

তো ভিউয়ার্স , বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট সিম সম্পর্কে যদি আপনাদের আলাদা আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচের কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে আপনার উক্ত প্রশ্নটি আমাদের জানাবেন আমরা যথাযথ চেষ্টা করব আপনার সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার । সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন  ভালো থাকুন , সুস্থ থাকুন , ধন্যবাদ ।

Leave a Comment