Vivo তাদের হাই রেঞ্জের ফোনের পাশাপাশি ঈদের মার্কেট ধরার জন্য মিড রেঞ্জের একটি অসাধারণ ফিচার যুক্ত ফোন বাজারে রিলিজ করে দিয়েছে। আমার মতে এই ফোন vivo এর ভেতর সবচেয়ে স্টাইলিশ গেমিং এবং ক্যামেরা ফোন হিসেবে পরিচিতি লাভ করবো। তো আজকে আমরা Vivo র এটা কোন ফোন এবং কি তার স্পেসিফিকেশন, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
Table of Contents
Vivo V27e Review in Bangla
আমরা জানি বিগত কয়েক বছর ধরে মিডঞ্জের মধ্যে Vivoর তেমন কোনোোো ভালো পারফর্মেন্স ওয়ালা ফোন মার্কেটে নেই। এবং শুধুমাত্র এই একটি কারণে আমি কখনোই Vivo ব্র্যান্ড পছন্দ করতাম না। কেননা তারা শুধু high range ফোনগুলো মার্কেটে লঞ্চ করে থাকে। কিন্তু Vivo এবার তার ব্যতিক্রম কিছু করে দেখিয়েছে। Vivo এবার ঈদের মার্কেট ধরে রাখার জন্য মিড রেঞ্জ এর মধ্যে এই ফোনটি মার্কেটে লঞ্চ করে দিয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আমরা এই ফোন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো এবং এই বাজেটের মধ্যে এই ফোন নেওয়া যাবে কি যাবে না তা নিয়ে পার্সোনাল মতামত দিব।
Vivo V27e Unboxing
Vivo V27e ফোনের বক্সটি খুললে প্রথমেই পাওয়া যাবে, ফোনটির ব্যবহারকারী নিয়মাবলী বই এবং সিম ইঞ্জেক্টর। সাথে ফোনে ব্যবহার করার জন্য রয়েছে নরম প্লাস্টিক পেছনের কভার। ৬৬ ওয়াটের ফার্স্ট চার্জার। Type C USB চার্জিং ক্যাবল এবং Vivo V27e মোবাইল ফোনটি।
Vivo V27e – সম্পর্কে
Vivo v ফোনটি খুবই স্টাইলিশ, সুন্দর ডিজাইন, ক্যামেরা পারফর্মেন্স এবং বাজেটের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন তাহলে এই ফোনটি আপনার জন্য হবে বেস্ট চয়েজ। আবার আপনি যদি একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন এবং আপনার বাজেট যদি মিড রেঞ্জের মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে এই ফোনটি আপনার জন্যই তৈরি। এই ফোনটিতে ভিডিও তৈরি করার জন্য ক্যামেরাতে যত প্রকার ইন্সট্রুমেন্ট দেওয়া দরকার প্রায় সবগুলোই দেওয়া হয়েছে।
Vivo V27e Price in Bangladesh
Launch Date | March 2024 |
Brand Name | Vivo |
Model | V27e |
Price | Tk-32,999/- |
মেমোরি – ডিসপ্লে – ওজন – সম্পর্কে
আমরা জানি যে একটি ভালো ফোনে যদি একটি মেমোরি ব্যবহার করা যায় তাহলে ফোনের পারফরম্যান্স অনেকটাই কমে আসে। তাই এই বিষয়টি Vivo মাথায় রেখে একটি ডেডিকেটেড সিম কার্ডের পাশাপাশি একটি মেমরি অথবা একটি সিম ব্যবহার করার সুবিধা রেখেছে এই ফোনটিতে। আপনি চাইলে এখানে দুইটি সিম ব্যবহার করতে পারবেন অথবা একটি সিম একটি মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন।
ফোনটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট হিসেবে রয়েছে ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম যা খুব সহজে এবং তাড়াতাড়ি কাজ করতেছিল এবং সেই সাথে ফোনে থাকা ফেইস আনলক সিস্টেমটিও খুবই ফাস্ট কাজ করতেছিল। এছাড়াও ফোনটিতে জরুরি ৩২ টি সেন্সর রয়েছে। ফোনটিতে রয়েছে ৬.৬২ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে এবং তার পাশাপাশি রয়েছে 120hz রিফ্রেশ রেট এবং ফোনটির রেজুলেশন হলো ২৪০০/ ১০৮০ পিক্সেল এবং ডিসপ্লের পিক্সেল টেন্সিটি হচ্ছে 398 ppi.
Camera – সম্পর্কে
আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হন অথবা আপনি যদি একজন ইউটিউব অথবা ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিকেটার হন এবং আপনি যদি একটি মিড রেঞ্জ এর ভেতর ভালো কোয়ালিটি ক্যামেরা সম্পূর্ণ স্মার্টফোন খুঁজে থাকেন। তাহলে Vivo V27e আপনার জন্য পারফেক্ট চয়েস হবে।
আপনি এই ফোনের মাধ্যমে খুবই সুন্দর এবং সাবলীলভাবে ফটোগ্রাফি করতে পারবেন। আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন তাহলে এই ফোনের ক্যামেরার স্পেসিফিকেশনগুলো দেখলেই বোঝা যাবেন, যে এই ফোনটি আপনার জন্য কিনা। পাশাপাশি আপনি যদি একজন ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন তাহলে এই ফোনটি আপনার জন্য হবে পারফেক্ট চয়েজ।
কেননা Vivo V27e ফোন ব্যবহার করে আপনারা কোনো সেকি সেকি ভাব পাবেন না। ভিডিও করার সময় এবং ভিডিওর কোয়ালিটি খুবই প্রিমিয়াম কোয়ালিটির হয়ে থাকে। আপনার যদি facebook এর জন্য অথবা ইউটিউব এর জন্য ব্লগ তৈরি করে থাকেন তাহলে এই ফোনটি আপনার জন্য সেরা হবে।
RAM & ROM – সম্পর্কে
Vivo এই ফোনটি বাংলাদেশের শুধুমাত্র একটি ভেরিয়েন্টি পাওয়া যায়। আর সেটি হল ৮ /২৫৬ জিবি স্টোরেজে। Vivo বাংলাদেশে অফিশিয়াল ভাবে শুধু এই একটি ভেরিয়ান্টের ফোনই রিলিজ দিয়েছে। আমি মনে করি একজন ফটোগ্রাফার জন্য এই ৮ জিবি ২৫৬ জিবি রেম রম এর ফোন খুবই যথেষ্ট হবে। তার নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তাই আপনাদের সাজেস্ট করবো। আপনি যদি উল্লেখিত কোনো কাজ করে থাকেন বা করার মন মানসিকতা আছে তাহলে এই ফোনটি আপনার জন্য।
Processor – Etc – সম্পর্কে
Vivo এই ফোনটিতে রয়েছে MediaTek Helio G99 Processor এবং এটি একটি Octa Core প্রসেসর এবং এর ট্রানজেক্টর সাইজ হলো 6nm এবং ফোনটিতে জিপিইউ হিসেবে রয়েছে MALI G57.
আপনি যদি একজন প্রেম প্রিয় মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে এই ফোন দিয়ে অনায়াসেই পাশ থেকে ছয় ঘন্টা গেমপ্লে করতে পারবেন এবং যদি কনটেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন এবং ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রেও আপনার জন্য এই প্রসেসর সিস্টেমটি খুবই ভালো হিসেবে গণ্য হবে।
Battery – Charging – সম্পর্কে
Vivo ফোনটিতে রয়েছে 4600 mha ব্যাটারি এবং এই ব্যাটারি চার্জ করার জন্য রয়েছে ৬৬ ওয়ার্ডের চার্জার এবং টাইপ সি ইউ এস বি চার্জিং ক্যাবল। এই ফোনটি ১০০% চার্জ করার জন্য সময় লেগেছে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট এবং সাধারণ ব্যবহার করলে এই ফোনটি একদিনের একটু বেশি চার্জ ব্যবহার করা যাবে।
অপরদিকে আপনি যদি একজন Game প্রিয় মানুষ হয়ে থাকেন। এবং অতিরিক্ত সময় ধরে গেম খেলেন। তাহলে এই ব্যাটারি অনুযায়ী আপনারা ৫ ঘন্টা গেম খেলতে পারবেন ১০০% চার্জ দিয়ে। আর আপনি যদি অতিরিক্ত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকেন, যেমন ফেসবুক তাহলে সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে ফোনটি আপনারা ছয় থেকে সাত ঘন্টা ব্যবহার করতে পারবেন।
Game – Multimedia Using – সম্পর্কে
আমরা এই ফোনটিতে পাবজি মোবাইল এবং ফ্রি ফায়ার সহ গেমগুলো আছে যেমন অ্যালফা নাইন সহ বিভিন্ন ছোট-বড় গেম প্লে করে দেখেছি। আমরা এখানে তেমন কোনো laging অথবা হিটিং সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। আপনি যদি হেভি গেম খেলে থাকেন। তাহলে এই ফোন দিয়ে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা খুব আরামে একাধারে গেম প্লে করতে পারবেন। পাশাপাশি আপনি যদি মাল্টিমিডিয়া খুব বেশি পরিমাণে করে থাকেন তাহলে এই ফোন দিয়ে আপনি ছয় থেকে সাত ঘন্টা ফেসবুক ইউটিউব সহ বিভিন্ন অ্যাপস চালাইতে পারবেন।
Battery Backup – সম্পর্কে
Vivo এই ফোনটি ১০০ পার্সেন্ট চার্জ করতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট এবং আপনি যদি সাধারনভাবে ফোনটি ব্যবহার করেন তাহলে একদিনের একটু বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ পেয়ে যাবেন। আর আপনি যদি গেম প্লে করেন একাধারে তাহলে ব্যাটারির ব্যাকআপ পাওয়া যাবে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ ঘন্টার মত। আপনি যদি মাল্টিমিডিয়া অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ পাবেন 6 থেকে 7 ঘন্টা।
এখানে যেহেতু ব্যাটারি 4600 mha , যদিও এখানে ব্যাটারি আরেকটু বাড়িয়ে দিতে পারতো। কিন্তু তারা এই দিক দিয়ে কমিয়ে দিয়ে অন্য দিক দিয়ে আরেকটু বাড়িয়ে দিয়েছে। যেমন এই ব্যাটারি চার্জ করার জন্য ৬৬ ওয়ার্ডের ফাস্ট চার্জার দেওয়া হয়েছে। যা চার্জ করার জন্য সময় লাগে মাত্র 30 থেকে 35 মিনিট। আমি মনে করি একটি ফোন ফুল চার্জ করার জন্য এর থেকে কম সময়ে আর হতে পারে না।
তাই আমি বলব আপনি যদি কম বাজেটের মধ্যে একটি ভালো ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তাহলে আপনার জন্য Vivo V27e এই ফোনটি একদম সেরা ফোন হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে ফোন কেনার আগে আপনার আশেপাশে অথবা আত্মীয়-স্বজন কেউ এই ফোনটি কিনেছে কিনা সেই বিষয়ে একটু খোঁজখবর নিতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারবেন যে ফোনের পারফরম্যান্স কেমন? কেমন চলছে? কেমন ব্যাটারি ব্যাকআপ দিচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন।
তো আজকে আর্টিকেল এখানেই শেষ করছি। আজকের ফোনের রিভিউটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করে তাদেরও জানার এবং দেখার সুযোগ করে দিবেন। সে পর্যন্ত আমাদের সঙ্গেই থাকুন ভালো থাকুন ধন্যবাদ ।